প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২১, ২০:০৮
ফলোআপ......
মা‘য়ের সামনে অটোরিক্সা চাপায় শিশু নিহতের ঘটনায় পার পেয়ে যাচ্ছে ঘাতক চালক!
মা'য়ের সামনে অটোরিক্সা চাপায় শিশু ইব্রাহিম খলিলের (৮) ঘাতক অটোরিক্সা চালক হাজীগঞ্জের বাকিলা ইউনিয়নের মধ্য সন্না মিজি বাড়ির মৃত ইদ্রিস মিজির ছেলে ইউনুস মিজি (৫০) প্রকাশ্যে ইনু মিজি শেষ পর্যন্ত পার পেয়ে যাচ্ছেন। শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোন অভিযোগ না করায় ঘাতক চালক পার পেয়ে যাওয়ার বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যায়।
|আরো খবর
এদিকে রোববার সকাল ৯ টায় জানাজা শেষে নিজ বাড়ির পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয় শিশুটিকে। শিশুটি একই ইউনিয়নের মধ্য সন্না খাঁন বাড়ির মাওলানা ইলিয়াস খাঁর একমাত্র সন্তান। এর আগে গত শনিবার সন্ধ্যার কিছু আগে হাজীগঞ্জের বাকিলা চাপাতলি সড়কের সন্নার কানির বাড়ি এলাকায় মায়ের সামনে অটোরিক্সায় শিশুটিকে চাপা দিলে মারাত্বক আহত হয়। ঘটনার পর পর শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। ঘটনার রাতেই প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ বাড়িতে নিয়ে আসে নিহতের পরিবার।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,বাকিলা চাপাতলী সড়কের বাকিলা বাখরপাড়া রুটে প্রায় ৩০ টি ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা চলাচল করছে। ইউনিয়ন পরিষদের কিংবা কোন ধরনের প্রশাসনিক অনুমোদন ছাড়া বিদ্যুৎ খেকো এই অটোরিক্সাগুলো বাকিলা বাজারস্থ ষ্ট্যান্ড কমিটিকে দৈনিক ২০ টাকা হারে সিরিয়ালের নামে চাঁদা দিয়ে বেপরোয়া গতিতে চলাচল করছে। বেপরোয়া গতিতে চলাচলের কারনে প্রায় সময় কোন না কোন অটোরিক্সা দুর্ঘটায় পতিত হয়। এছাড়া ও বাকিলা উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান গেটের বিপরীত পাশে বাকিলা চাপাতলী সড়কের উপর এই অটোরিক্সার ষ্ট্যান্ড গড়ে উঠার কারনে সারাক্ষন সড়কের এই অংশে যানজট লেগে জনদূর্ভোগ চরমে উঠে।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, ইব্রাহিম খলিল মারা যাওয়ার পর থেকে ঘাতক অটোরিক্সা চালক ইউনুস মিজি পলাতক রয়েছে। পলাতক থেকে সে শিশুটিকে হত্যার বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য স্থানীয় একটি চক্রকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বাকিলা বাজারস্থ সিএনজি ষ্ট্যান্ড কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম পাটোয়ারী জানান, সিরিয়ালের জন্য দৈনিক ২০ টাকা করে দিয়ে থাকে। ব্যাটারি চালিত এই অটোরিক্সাগুলোর কোন অনুমতি নেই বলে জাহাঙ্গীর আলম পাটোয়ারী আরো জানান, এখানে প্রায় ৩০ টি অটোরিক্সা আছে তবে দৈনিক চলাচল করছে ২০/২২ টি।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ হারুনুর রশিদ জানান,শিশুটির পরিবারের লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যার আগে বাকিলা চাপাতলি সড়কের সন্না কানির বাড়ির সামনে মায়ের সাথে সড়কের পাশে দ্বাড়িয়ে ছিলো শিশু ইব্রাহিম খলিল (৮)। সড়কের বিপরীত পাশ থেকে ব্যাটারি চালিত একটি অটোরিক্সা ইব্রাহিমকে চাপা দেয়। এতে মারাত্বক রক্তাক্ত জখম হয় শিশুটি। সাথে সাথে স্থানীয়রা শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষনা করে।
ঐ দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সন্না গ্রামের মৃত সেরাজল হকের ছেলে সফিকুর রহমান জানান, শিশুটি স্থানীয় ফুলছোঁয়া মাদ্রাসার ছাত্র। সন্ধ্যার কিছু আগে শিশুটিকে তার মা মাদ্রাসায় দিয়ে আসার জন্য নিজেদের বাড়ির সামনে সড়কের পাশে এসে দ্বাড়ায়। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই সড়কের বিপরীতি দিক থেকে ব্যাটারি চালিত একটি অটোরিক্সা শিশুটির উপর দিয়ে একটি উঠিয়ে দেয়। এ সময় আমরা অটোরিক্সাটিকে উল্টে ধরে তার নীচ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হলে সেখানে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষনা করে।